আশরাফ আহমেদ, হোসেনপুর (কিশোরগঞ্জ) :
গতবছর পাটের মূল্য অস্বাভাবিকভাবে বৃদ্ধি পাওয়ায় পাট চাষে আগ্রহ বেড়ে যায় পাটচাষিদের মাঝে। এ চলতি মৌসুমে হোসেনপুর উপজেলার বিভিন্ন গ্রাম ও প্রত্যন্ত চরাঞ্চলের জমিতে লক্ষ্যমাত্রার চেয়েও ব্যাপক ভাবে সোনালী আঁশ পাটের আবাদ করা হয়েছে। দেশে সার, বীজ ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক খরচ কম ও অনুকূল আবহাওয়া থাকায় সোনালী আঁশের বাম্পার ফলন হয়েছে।
এদিকে পাট কাটার এখন উপযুক্ত সময় চলছে । কিন্তু ভরা বর্ষায় উপজেলায় বৃষ্টি না থাকায় নদী-নালা, খাল-বিল, ডোবায় পানির দেখা নেই। কিশোরগঞ্জের নরসুন্দা ও ব্রহ্মপুত্রের শাখা নদীগুলোতে নাব্যতায় জোয়ারের পানি প্রবেশ করেনি। ফলে পাট কেটে প্রয়োজনীয় পানির সংকটে জাগ দিতে না পারায় বিপাকে পড়েছেন স্থানীয় পাট চাষীরা।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার বিভিন্ন গ্রাম ও চরাঞ্চলের সমতল ও অসমতল জমিতে চলতি মৌসুমে ২হাজার ১১২হেক্টর জমিতে পাটের আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। তবে এ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪০০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। তন্মধ্যে দেশীয় পাট ১ হাজার ৫০০ হেক্টর ও তোষা জাত ৫০০ হেক্টর ও অন্যান্য জাতের পাট রয়েছে। বর্তমানে বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টির দেখা মিলছে না । ফলে নদী-নালা-খাল-বিল ডুবা এখনো শুষ্ক। তাই পাট কেটে আঁটি বেঁধে জমিতেই বিছিয়ে রাখছে বৃষ্টির অপেক্ষায়। ফলে রোদে শুকিয়ে পাটের গুনাগুন নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। পাটের জমি থেকে ব্রহ্মপুত্র নদ প্রায় ১ থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে। এত দূরে পাটের আঁটি বহন করে নিয়ে শ্রমিকের খরচ অনেক বেশি। ফলে উৎপাদিত পাটের ফলন কমের আশঙ্কা করছেন চাষিরা। তাই পাট চাষ করে আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে জানান স্থানীয় পাটচাষিরা।
উপজেলার জিনারী ইউনিয়নের গ্রামের পাটচাষি সাইফুল ইসলাম, সিদলা ইউনিয়নের সাহেবের চর গ্রামের পাটচাষি মফিজ উদ্দিন, চর বিশ্বনাথপুর গ্রামের হেলাল উদ্দিনসহ অনেকেই বীরযোদ্ধা ডট কমকে জানান, বাজার দাম বেশি থাকায় এ বছর অনেক পাট চাষ করেছিলাম। তবে এখন পানির অভাবে পাটের জাগ দিতে না পারায় খেতেই শুকিয়ে যাচ্ছে পাট। তাই পাটে লোকসান গুনতে হবে তাদেরকে।
কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইমরুল কায়েস বীরযোদ্ধা ডট কমকে বলেন, পানির সাময়িক সংকট থাকলেও আমরা কৃষকদেরকে বিকল্প পদ্ধতিতে পানিতে ভিজিয়ে পাটের আঁশ ছুটানোর পরামর্শ দিতেছি।